চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা সমিতি, ঢাকা

সভাপতির বক্তব্য

সৈয়দ নুরুল ইসলাম
সভাপতি

আমি পূর্বপুরুষের ইতিহাস রোমন্থন করি।কারণ যার পূর্ব পুরুষ শৌর্য-বীর্যের অধিকারী, সে অন্তত বড়  বীর না হলেও কাপুরুষ যে নয়, এটা নিশ্চিত ! আমি শয়নে-স্বপনে-জাগরণে প্রলম্বিত মস্তিস্কের  দৃঢ়তায় স্থির থাকি।কারণ আমি  বিশ্বাস করি,মনুষ্য মস্তিস্ক স্রস্টা ছাড়া কারও কাছেই নত হবার নয়।  যে গর্বিত মৃত্তিকায় আমার বেড়ে ওঠা,সেটিরও জন্ম বঙ্গ ভূমি গড়ে  ওঠার সূচনা লগ্নের ঠিক পরেই  প্লায়োস্টোসিন যুগের শুরুতে।প্রাচীন যুগে বাংলার প্রথম নরপতি ছিলেন শশাংক,আমার পিতৃ  পুরুষের পূর্বসূরি। সেই মহাবীরের গৌরবগাঁথা গৌড়ের রাজধানী কর্ণসুবর্ণের লাল মৃত্তিকায়,আমার পূর্ব  পুরুষের বংশ পরস্পরার সূত্র ধরেই আমার জন্ম,আমার বিচরণক্ষেত্র।তাই আমি বিদ্রোহী কবি  কাজী নজরুলের কণ্ঠে বার বার ফুঁসে উঠিশির নেহারি আমারই নতশির, শিখর হিমাদ্রির!”   আমি তেভাগা আন্দোলনের সোনালী অধ্যায়, সাঁওতাল বিদ্রোহের অগ্নি শিখা ইলামিত্র কিংবা  মাতলা মাঝির বীরত্তে আপ্লূত হই। আমি বীর মুক্তিযুদ্ধের আত্মত্যাগী নির্ভীক সেনানী শহীদ  ক্যাপ্টেন মহিউদ্দিন জাহাঙ্গীরের সমাধির পাশে দাঁড়িয়ে অশ্রু বিসর্জনের পাশাপাশি মাতৃভক্তির  দৃষ্টান্তে বিস্মিত হই। আমি আম্রকাননের সমাহারে অবারিত সবুজের বুক চিরে বয়ে চলা কালবৈশাখীর  ছন্দে আন্দোলিত হই, আর অবচেতন মনে গেয়ে উঠি রবীন্দ্রনাথ এর গান, “ওমা ফাগুনে তোর আমের বনে ঘ্রাণে পাগল করে....” আমি আওলিয়ার পুণ্যভূমি গৌড় মৃত্তিকার স্নেহাশীষ বক্ষে শায়িত শাহ নেয়ামত উল্লাহ (রঃ) এর স্মৃতি বিজড়িত সোনামসজিদ তোহাখানার পবিত্র আবহে বিমোহিত হই।আমি কল্পনায় বাংলার বৃহত্তম  প্রধান বহতা পদ্মার উজান তরীর কাণ্ডারি সেজে উদ্বেলিত হই।আমি মাঝি-মাল্লার গান আর গম্ভীরার টানে আকৃষ্ট হই। আমি দুকূল ব্যাপী মহানন্দার অববাহিকার  সুরভীতে উদাস হই।আমি বার বার ফিরে আসি কূজনের ডাকে, পলি জমা উর্বর কাঁচা মাটির ঘাসে  কিংবা উদাস করা দখিনা মলয়ের মায়াবী পরশে। আমি সর্বদা উঁচুতে ওঠার স্বপ্ন দেখি। কারণ, আমি জানি, মানুষ স্বপ্নের সীমানা ভেদী  না হলেও,যার গন্তব্য উদ্ধমুখী , কেবল সেই পারে শীর্ষে আরোহণের প্রেরণা যোগাতে। সুদূর কিংবা অদূর যাই হোক, আমার জন্মভূমিকে নিয়ে আমি এমনটিই বলতে চাই, “চাঁপাই এগোলেই, এগোবে বাংলাদেশ।’’

ঢাকাস্থ চাঁপাইনবাবগঞ্জ সমিতির নবনির্বাচিত কমিটির যাত্রালগ্নে গর্বিত মৃত্তিকার সন্তান  চাঁপাইনবাবগঞ্জের প্রতিটি নাগরিকের প্রতি রইল প্রাণঢালা শুভেচ্ছা, স্বপ্নিল আগামীর আমন্ত্রণ এবং সর্বময় সাফল্যের শুভকামনা।